Community Based Activity - First Aid ( প্রাথমিক চিকিৎসা)

 Community Based Activity- First Aid (প্রাথমিক চিকিৎসা)


First Aid: 

    প্রাথমিক চিকিৎসা সাধারণভাবে বোঝায় যে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ব্যক্তিকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার আগে জরুরি ও মৌলিক কিছু চিকিৎসা ও সেবা প্রদান করা, যা তাকে সাময়িক স্বস্তি দেয়। প্রাথমিক চিকিৎসার ইংরেজি শব্দটি হলো "FIRST AID"

     প্রাথমিক চিকিৎসা চিকিৎসার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং এটি প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার ধারণার প্রতিষ্ঠাতা হলেন ডাক্তার ফ্রেডিক এডমার্ক, যিনি একজন মার্শাল চিকিৎসক ছিলেন। তিনি প্রথমে উপলব্ধি করেন যে, দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির স্বাস্থ্য অবনতি রোধ করার জন্য চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার পূর্বে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা অপরিহার্য।


  FIRST AID এর অর্থ -


FIRST AID শব্দটির অর্থ বিশ্লেষণ করা হল-

F - FAST (দ্রুত বা তাড়াতাড়ি)
I - INVESTIGATION (দ্রুত দুর্ঘটনাগ্রস্ত ব্যক্তির ক্ষতস্থান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা)
R - RELIEF (আহত ব্যক্তিকে সামরিক স্বস্তি প্রদান করা)
S - SYMPTOM (আঘাতের লক্ষণ নির্ধারণ করা)
T - TREATMENT (আঘাতের লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা করা)
A - ARRANGE (চিকিৎসার বন্দোবস্ত করা)
I - IMMEDIATE (অতি দ্রুত চিকিৎসার সূচনা করা)
D - DISPOSAL (আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসালয়ে নিয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত করা)

প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসমূহ -


১. প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানকারী ব্যক্তি ডাক্তার নাও হতে পারেন, তাই চিকিৎসা দ্রুত সম্পন্ন করা জরুরি।
২. প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানকারীর উপস্থিত বুদ্ধি থাকা অপরিহার্য।
৩. প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানকারীর ধীর ও স্থির মনোভাব থাকা প্রয়োজন।
৪. দুর্ঘটনাগ্রস্ত ব্যক্তির মানসিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে।
৫. আঘাতের লক্ষণ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করা উচিত।
৬. আহত ব্যক্তির মূল চিকিৎসায় কোনো ধরনের বিলম্ব বা গাফিলতি না হওয়ার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
৭. যত দ্রুত সম্ভব আহত ব্যক্তিকে চিকিৎসালয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

FIRST AID BOX -


বাড়িতে বা বিদ্যালয়ে আমাদের হাতের কাছে সাধারণত দুর্ঘটনার কথা মাথায় রেখে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ও অন্যান্য সামগ্রী যে বাক্সের মধ্যে রাখা হয়, তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা বা First Aid Box বলে।

সাধারণত এই বাক্সের থাকে তুলো, গজ, রোলার, ব্যান্ডেজ, টুর্নিকেট, ছুরি, কাঁচি, ব্লেড, লিউকোপ্লাস্ট, ডেটল, বেঞ্জিন, আয়োজিন, রেক্টিফায়ড স্পিরিট, ভিক্স, আয়োডেক্স, পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট লোশন, মারকিউরোক্রোম লোশন, বার্নল, সুখল, বোরোলিন, সাবান, দড়ি, পরিষ্কার কাপড়ের টুকরো ইত্যাদি দ্রব্য। প্রাথমিক চিকিৎসার বাক্সের উপরে ও পাশের দিকে লাল রঙের যোগ চিহ্ন বা রেড ক্রস দিয়ে রাখতে হয়।

প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ ও তার ব্যবহার -


১. তুলো - সাধারণত ক্ষতস্থান পরিষ্কার করার জন্য ও ড্রেসিং, ব্যান্ডেজ করার জন্য প্রয়োজন।
২. গজ ক্ষতস্থান চাপা দেওয়ার জন্য এটি প্রয়োজন। এটি দেখতে চৌকো আকারের।
৩. রোলার ব্যান্ডেজ আহত স্থানটি ভালোভাবে বাঁধার জন্য ব্যবহৃত করা হয়।
৪. ব্যান্ডেজ - ক্ষতস্থানকে ধূলো-বালি থেকে রক্ষার জন্য এটি ব্যবহৃত করা হয়।
৫. টুর্নিকেট রক্তপাত বন্ধ করার জন্য বা সাপের কামড়ের স্থানের উপর রক্ত চলাচল বন্ধ করার জন্য এই উপকরণটি ব্যবহৃত হয়।
৬. ছুরি, কাঁচি ও ব্লেড গজ, ব্যান্ডেজ, দড়ি ইত্যাদি কাটার জন্য এই উপকরণগুলি ব্যবহৃত হয়।
৭. লিউকোপ্লাস্ট অল্প ক্ষতস্থানে তুলো, গজ বা ব্যান্ডেজ কে সঠিকভাবে আটকে রাখার জন্য লিউকোপ্লাস্ট ব্যবহার করা হয়। অনেক সময় মচকানো স্থানে বিশেষত আঙ্গুলে সরাসরি ব্যথা প্রশমনের জন্য লিউকোপ্লাস্ট জড়িয়ে রাখা হয়।
৮. ডেটল/স্যাভলন/সুখল সাধারণত কাটা বা ছড়ার ক্ষতস্থানে পরিষ্কার করার জন্য তুলো বা গজের সাহায্যে এই উপকরণ গুলির যে কোনো একটি ব্যবহার করা হয়।
৯. বেঞ্জিন ও আয়োডিন কাটা জায়গায় এটি ব্যবহৃত করা হয়।
১০. বার্নল - সাধারণত দেহের কোনো অংশ পুড়ে গেলে পোড়া স্থানে ব্যথা উপশমের জন্য বার্নল লাগানো হয়।
১১. পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট লোশান/ মারকিউরোক্রোম লোশান/ রেক্টিফায়েড স্পিরিট এই উপকরণ গুলির ব্যবহারে ক্ষতস্থানে জীবাণু প্রতিরোধে করা সম্ভবপর হয়।
১২. সাবান - ক্ষতস্থানে পাশে ধুলোবালি পরিষ্কার করার জন্য অল্প হ্মার যুক্ত সাবান ব্যবহার করা হয়।
১৩. দড়ি - সপদংশন চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

কয়েকটি প্রাথমিক চিকিৎসার সাধারণ পরিচয় -


(i) সাধারণ কাটা/ সাধারণ ক্ষত:- অনেক সময় আমরা নিজের অসাবধানতায় ফলে পড়ে গিয়ে কেটে বা ছুঁড়ে যায়। সেই স্থানটিকে বলা হয় ক্ষতস্থান। আসলে মানবদেহের যে সমস্ত শিরা বা উপশিরায় আছে, তা কোনো একটি আঘাতপ্রাপ্ত হলে উৎপত্তি হয় এবং রক্তপাত হতে শুরু করে। দ্রুত রক্তপাত বন্ধ করতে না পারলে রোগ জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে ধুলো বালি জমে পচন ধরতে পারে।

• ক্ষতের প্রকারভেদ -

সাধারণত আমাদের দেখা কয়েক রকম-

1. ইনসাইজড ব্লেড, ছুঁড়ি, কাঁচি, কাচ ইত্যাদির আঘাত প্রাপ্ত ক্ষত
2. কনটিউসড হোঁচট খাওয়া বা থেঁতলে যাওয়ার আঘাত প্রাপ্ত ক্ষত।
3. ল্যাসেরেটেড জক্ত, জানোয়ারের বা মানুষের আঁচড়ে বা কামড় জনিত ক্ষত।
4. নাংচারড লোহার শিক বা পেরেক জাতীয় দ্রব্যের আঘাত প্রাপ্ত মত।

প্রতিবিধান -

• প্রথমে ক্ষতস্থানটি চেপে ধরে রক্তপাত বন্ধ করতে হবে।
• পরে ডেটল/সুখল/স্যাভলন বা রেক্টিফায়েড স্পিরিটে তুলো বা গজ ভিজিয়ে ক্ষত স্থানটি পরিষ্কার করা।
• যদি ক্ষত স্থানের সংক্রমণ আটকানোর জন্য এরপর বিভিন্ন প্রকার অ্যান্টিসেপ্টিক ক্রিম বা লোশন ক্ষত স্থানে লাগিয়ে দিতে হবে।
• তারপর যদি ক্ষতস্থানের রক্তপাত বন্ধ না হয় তাহলে গজ বা তুলো দিয়ে ক্ষতস্থানটি চাপা দিয়ে ব্যান্ডেজ বাঁধতে হবে।
• যদিও তারও সমস্যার সমাধান না হয় তাহলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসালয়ে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করতে হবে।
• অনেক সময় গ্রাম্য অঞ্চলে রক্তপাত বন্ধের জন্য ক্ষতস্থান পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে গাঁদা পাতার রস বা দুর্বার রস ক্ষত স্থানে লাগিয়ে দেওয়া হয়।

(ii) রক্তক্ষরণ - দেহের কোনো অংশ যদি গভীর ভাবে কেটে যায় বা রক্তবাহী নালী (রক্তজালিকা, শিরা, ধমনির) যদি সংযোগ ছিন্ন হয় তবে ক্ষতস্থান দিয়ে বেগে রক্ত বার হয়। এই রক্তক্ষরণ অতিদ্রুত বন্ধ করার দিকে নজর দিতে হবে।

• রক্তক্ষরণের প্রকারভেদ-
১.দেহের রক্ত জালিকা কাটলে কাটলে রক্ত চুঁইয়ে চুইয়ে পড়ে।
২. দেহের শিরা কাটলে লাল কালচে রক্ত গল গল করে বের হয়।
৩. ধমনি কাটলে উজ্জ্বল লাল রক্ত ফিনকি দিয়ে বের হয়।

প্রতিবিধান -

• প্রথমে ক্ষতস্থানটি আঙুল দিয়ে চেপে ধরতে হবে বেশ কিছুক্ষণ, একে প্রত্যক্ষ চাপ দেওয়া বলা হয়।
• প্রত্যক্ষ চাপে রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলে সংশ্লিষ্ট অঙ্গকে নিশ্চল রেখে অর্থাৎ প্রেশার পয়েন্ট এ পরোক্ষ চাপ দিতে হবে।
• প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ চাপে রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলে ক্ষত স্থানের কিছু উপরে টুর্নিকেট বাঁধন দেওয়া যেতে পারে।
• ক্ষতস্থানে জীবাণু সংক্রমণ রোধ করার জন্য অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করে ক্ষতস্থানটি ভালো ভাবে ড্রেসিং করে দিতে হবে।
• অত্যাধিক রক্তক্ষরণ হলে রোগীকে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসালয়ে নিয়ে যাওয়া ও প্রতিষেধক দেওয়া বন্দোবস্ত করতে হবে।
• রক্তপাতের স্থানে বরফ ব্যবহার করতে হবে।

(iii) মচকে যাওয়ামূলত আমাদের নিজেদের অসাবধানতায় জন্য দেহের কোনো অঙ্গ বা প্রত্যঙ্গ স্বাভাবিক সঞ্চালনের পরিবর্তে মোচড় খেয়ে গেলে ওই স্থানটিতে ব্যথার সৃষ্টি হয়। এই বিষয়টিকেই মচকে যাওয়া অর্থে ধরে নেওয়া হয়। সাধারণত হাত বা পায়ের আঙ্গুল কবজি, গোড়ালি ইত্যাদি মচকে যায়।

• লক্ষণ-

1. আঘাত স্থানে ব্যথা অনুভূত হবে।
2. সন্ধিস্থল ফুলে যাবে।
3. আহত স্থল বিবর্ণ হয়ে নীল বা লাল আকার ধারণ করবে।
4. স্বাভাবিকভাবে নড়চড় করলে ব্যথা অনুভূত হবে।

প্রতিবিধান -

• আহত স্থানটিতে বরফ বা ভিজে কাপড় বা ন্যাকরা লাগাতে বা জড়িয়ে রাখতে হয়।
• আহত স্থানটিতে চুন-হলুদ গরম করে লাগালে ব্যথার উপশ্রম ঘটে।
• হাতের কাছে ব্যথা উপশ্রমকারী স্প্রে বা মলম ব্যবহার করতে হবে।
• মচকানো স্থানটি যতটা সম্ভব বিশ্রাম পায় সেদিকে অবশ্যই বিশেষ নজর রাখতে হবে।
• এগুলির সাহায্য নিয়ে ব্যাথা প্রশমন না ঘটলে বিষয় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ রাখতে হবে।

(iv) বৈদ্যুতিক শককোনো ব্যক্তি নিজের অসাবধানতায় বা অন্য কোনো কারণবশত যদি ইলেকট্রিক তার শরীরে সরাসরি স্পর্শ করে, তাহলে তাকে আমরা শক খাওয়া বলে থাকি।

প্রতিবিধান -

• ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন্য কোনো ব্যক্তি প্রথম কর্তব্য হল বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া।
• কোনো কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা না গেলে বড়ো এবং শুকনো লাঠির আঘাতে সেই ব্যক্তিকে বিদ্যুতের কবল থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে হবে।
• আহত ব্যক্তির দেহে কোনো বাঁধন থাকলে তা যতটা সম্ভব আলগা করে দিতে হবে।
• এরপর আক্রান্ত ব্যক্তিকে গরম চা, কফি, দুধ ইত্যাদি খাওয়াতে হবে।
• এরপর চিকিৎসালয় নিয়ে গিয়ে আহত ব্যক্তির দ্রুত সেবার ব্যবস্থা করতে হবে।

(v) সর্পদংশন - নিজের অজানতে বা জানতে কোনো সাপের সামনাসামনি হলে বা অসাবধানতার দরুন সর্পদংশন হয়।
• লক্ষণ- সাপের দংশন মূলত দু'রকমের হয়।

1. যদি কোনো বিষধর সাপে দংশন করে তাহলে দুই সেন্টিমিটার অন্তর দুটি ক্ষতচিহ্ন দেখতে পাওয়া যায়।
2. আবার যদি কোনো বিষহীন সাপে দংশন করে তাহলে কামড়ানো স্থানের উপর নিচে একাধিক ক্ষতচিহ্নের দেখা যায়।

প্রতিবিধান - সাপের কাটা রোগীর ক্ষতস্থানের উপরের দিকে অন্তত একহাত দূরত্বে তিনটি বাঁধন দিতে হবে।

• এরপর বাঁধনের নীচের দিকে কোনো স্থানের নতুন ধারালো ব্লেড বা ছুঁরি দিয়ে কেটে দিতে হবে।
• বিষহীন সাপে কামড়ালে স্থানটি ভালোভাবে ডেটল জল দিয়ে বা পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট গোলা জল দিয়ে ধুয়ে
• ক্ষতস্থানে মারকিউরোক্রোম লাগানো যেতে পারে।
• বিষধর সাপে কামড়ালে টুর্নিকেট বাঁধন দিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্থানান্তরিত করতে হবে।
• স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার মধ্যবর্তী সময় প্রয়োজনে বাঁধন আলগা করে বা বাঁধনের স্থান পরিবর্তন করে দিতে হবে।
• সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রোগীকে কখনোই ঘুমাতে দেওয়া যাবে না এবং তাকে সাহস জুগিয়ে যেতে হবে।

(vi) আগুনে পোড়া- আমাদের অসাবধানতায় অনেক সময় জামা কাপড়ে আগুন লেগে শরীরের অংশ বিশেষ পুড়ে বা ঝলসে যায়।

 প্রতিবিধান -

• প্রথমে ছোটাছুটি বা দৌড়াদৌড়ি না করে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
• দ্রুত গায়ে মোটা কম্বল বা লেপ জাতীয় কিছু চাপা দিয়ে অথবা তাকে মাটিতে শুইয়ে গড়াগড়ি দিয়ে আগুন নেভাতে হবে।
• সাবধানে গায়ে জামাকাপড় খুলে দিতে হবে। জামাকাপড়ের কোনো অংশ গায়ে লেগে থাকলে জোর করে না তুলে আস্তে আস্তে তুলে দিতে হবে।
• গায়ের ফোসকা পড়লে তা কখনোই গেলে দেওয়া যাবে না।
• অল্প পোড়া হলে চুনের জল বা নারকেল তেল বা আলুবাটার রস লাগানো যেতে পারে।
• পোড়া একটু বেশি হলে বার্নল বা স্পিরিট লাগালে উপকার হয়।
• পোড়াস্থানে বাতাস লাগানো উচিত নয়, তাই ওই স্থানটি হালকা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে অথবা হালকা ব্যান্ডেজ বেধে দিতে হবে।
• এরপর রোগীর দ্রুত আরোগ্যের জন্য চিকিৎসালয়ে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

(vii) জলে ডোবা- সাধারণত কোনো ব্যক্তি জলে ডুবে গেলে তার ক্ষেত্রে যে সমস্ত প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়।

প্রতিবিধান -

• প্রথমে সেই ব্যক্তিকে পেট থেকে জল বের করতে হবে, এক্ষেত্রে পা ধরে মাথা নিচের দিকে ঝোলানো যায় অথবা কোমর ধরে মাথা ও হাত একদিকে পা একদিক ঝুলিয়ে ধরলে ও জল বেরিয়ে আসে।
• উপরের পদ্ধতি দুটি সম্পন্ন করতে না পারলে রোগীকে উপুর করে শুইয়ে পেটের নীচে বালিশ চাপা দিয়ে নিচে চাপ দিলে মুখ থেকে জল বেরিয়ে আসে।
• পেট থেকে জল বেরিয়ে এলে বেরিয়ে এলে রোগীর কৃত্রিম শ্বাস প্রশ্বাস চালানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
• তার ভিজে জামা কাপড় জামা কাপড় ছাড়িয়ে শুকনো জামা কাপড় পরাতে হবে এবং সারা দেহে কম্বল দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। প্রয়োজনে হাত বা পায়ের তলায় গরম সেঁক দেওয়া হয়।
• এরপর নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগীকে স্থানান্তরিত করতে হবে।

বিদ্যালয়ে স্তরে প্রাথমিক চিকিৎসার উদ্দেশ্য:

• শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
• শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক চিকিৎসার বিষয়ে জ্ঞান প্রদান করা।
• শিক্ষার্থীদের মধ্যে বুদ্ধিমত্তা, সাহস এবং প্রত্যুৎপন্নমতিত্বের ধারণা বিকাশ করা।
• শিক্ষার্থীদের মধ্যে দলবদ্ধভাবে কাজ করার মানসিকতা গড়ে তোলা।
• শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বের দক্ষতা উন্নয়ন করা।
• শিক্ষার্থীদের মধ্যে চেতনা ও মূল্যবোধের ধারণা জাগ্রত করা।

বিদ্যালয় স্তরে প্রাথমিক চিকিৎসার উপযোগিতা:


1. প্রাথমিক চিকিৎসার প্রয়োজন যে কোনো ব্যক্তির জন্য যে কোনো সময় হতে পারে, তাই শিক্ষার্থীদের এই বিষয়ে সচেতন করা অপরিহার্য।
2. প্রাথমিক চিকিৎসা বিদ্যালয়ের সামাজিক কার্যক্রমের একটি অপরিহার্য অংশ হিসেবে গণ্য করা হয়।
3. বিদ্যালয় বা বাড়ির যে কোনো স্থানে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, তাই প্রাথমিক চিকিৎসার জ্ঞান থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
4. বিপদের সময় সহায়তা প্রদানই প্রকৃত বন্ধুত্বের পরিচায়ক, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে সামাজিক দায়িত্ববোধের প্রকাশ ঘটায়।
5. বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা ও মূল্যবোধের বিকাশ ঘটে।
6. বিভিন্ন চিকিৎসা উপকরণ ও ওষুধ ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা পরিলক্ষিত হয়।
7. দুর্ঘটনাগ্রস্ত ব্যক্তি বা রোগীর সেবার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহানুভূতি ও সমতার ধারণা ফুটে ওঠে।

উপসংহার -


শেষে বলা যায় যে, একটি বিদ্যালয়ে অনেক শিক্ষার্থী পঠন-পাঠনের জন্য উপস্থিত হয়। প্রতিদিন বিদ্যালয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তারা একত্রে অধ্যয়ন, খেলা ও আহার করে। বিদ্যালয় বা বাড়ির যে কোনো স্থানে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই প্রতিটি বিদ্যালয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার একটি বাক্স থাকা আবশ্যক। এটি শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের আঘাতের জন্য নয়, বরং তাদের প্রকৃত জ্ঞান অর্জনের জন্যও প্রয়োজনীয়। যাতে বিপদের সময় প্রত্যেক শিক্ষার্থী প্রাথমিক চিকিৎসার মাধ্যমে আহত ব্যক্তিকে সাময়িক স্বস্তি প্রদান করতে সক্ষম হয়।

Download Full PDF:







Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Ok, Go it!